চিকিৎসকদের ঐতিহাসিকভাবে গ্রহণ করা একটি শপথ। বহুল পঠিত গ্রীক চিকিৎসা সংক্রান্ত পাঠ্যসমূহের মধ্যে এটি অন্যতম। সাধারনত একজন নতুন চিকিৎসককে দেবতার নাম ও নিয়মের -শিষ্টাচারের নির্দিষ্ট মান পালন করতে শপথ আবশ্যক। ঐতিহাসিকভাবে বহু দেশে শপথটিকে চিকিৎসকদের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে গণ্য করা হয়।
ঐতিহাসিকগণ মনে করেন যে, পশ্চিমী সংস্কৃতিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস বা তার একজন শিষ্য এই শপথ লিখেছিলেন।
[১] মূল শপথবাক্যটি পঞ্চম শতকের শেষদিকে আয়নিক গ্রীক ভাষায় লেখা হয়েছিল।
[২] একে সাধারণত হিপোক্রেটিক সংগ্রহে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শপথটির আধুনিক রূপের বাংলা পাঠঃ
এ শপথনামার নয়টা অনুচ্ছেদে যা নিম্নরূপ——–
(১) আমি নিরাময়কারী অ্যাপোলোর নামে, স্বাস্থ্যের নামে ও আরোগ্যকারী সকল ক্ষমতার নামে শপথ করছি। সকল দেব-দেবীকে সাক্ষী রেখে শপথ করছি যে, আমি এ শপথ ও প্রতিজ্ঞাবানী আমার সকল সামর্থ্য ও বিচারক্ষমতা প্রয়োগ করে রক্ষা করতে প্রায়াস পাব। ( প্রত্যেকে তাঁেদর নিজস্ব ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ¯্রষ্ঠার নাম নিবেন)
(২) আমি আমার শাস্ত্রের শিক্ষককে (গুরুকে) সব ধরনের সম্মান প্রদর্শন করব, যেমন আমার পিতামাতাকে করে থাকি। আমি আমার জীবনকে তাঁর সাথে ভাগ করে নেব এবং তাঁর সব দেনা শোধ করব। আমি তাঁর সন্তানদেরকে আমার ভাই বলে মনে করব এবং যদি তাঁরা ইচ্ছা করেন, তাদেরকে বিনা পারিশ্রমিকে এ শাস্ত্র শিক্ষা দেব। আমি আমার গুরুর কাছে যে সব বিধান, বক্তৃতা ও অন্যান্য শিক্ষা লাভ করেছি, তা সব আমার পুত্রদেরকে দান করব। আর দান করব গুরুর পুত্রদেরকে, আর যারা যথাযথভাবে শিক্ষানবিশি গ্রহন করবে ও শপথ করবে তাদেরকে। এছাড়া আমি আর কাউকে তা দান করব না।
(৩) আমি আমার সামর্থ্য ও বিচার ক্ষমতার সব শক্তি রোগীদের সাহায্য করার ব্যাপারে প্রয়োগ করব। আমি আমার জ্ঞান প্রয়োাগ করে কারও কোন ক্ষতিসাধন করব না।
(৪) কেউ চাইলেও আমি কাউকে প্রাণনাশক ওষুধ দেব না। আমি ও ধরনের কোন সংবাদ পরিবেশন করব না। আমি কোন মহিলাকে গর্ভপাত করানোর উপায় জানাব না।
(৫) আমি আমার জীবনে ও পেশায় চরিত্রবান ও ধর্মপরায়ণ হব।
(৬) আমি আমার শাস্ত্রের বাইরে অন্য কোন পেশা থেকে বিরত থাকব।
(৭) আমি যখন কোন বাড়িতে যাব, তখন কেবলমাত্র কোন রোগীকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাব এবং কখনই কারও কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে যাব না। আমি আমার সুযোগ-সুবিধাকে নারী বা পুরুষ কারও সাথেই যৌন-সংযোগ ঘটানোর কাজে ব্যবহার করব না, হোক সে ব্যক্তি স্বাধীন কিংবা ক্রীতদাস।
(৮) আমি পেশাগত বা ব্যক্তিগতভাবে যাই দেখি বা শুনি না কেন, উক্ত বিষয় প্রকাশ করব না; আমি উহার সব গোপন রাখব এবং কাউকে জানাব না।
(৯) আমি যদি এ শপথবাণী মেনে চলি এবং এর ব্যতিক্রম ঘটতে না দেই, তবে আমি আশা করব, আমি জীবনে ও পেশায় যেন উন্নতি লাভ করি এবং সবকালের সবার মধ্যে সুনাম অর্জন করতে পারি। আমি যদি এ শপথ না মানি ও লংঘন করি, তবে আমার পরিণাম যেন অন্য রকম হয়।
এখানে আরও উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৪৮ সালে হিপোক্রেটিসের শপথনামা অবলম্বনে চিকিৎসকদের একটা বিশ্বব্যাপী শপথনামা তৈরি করা হয়। এ নতুন ডড়ৎষফ গবফরপধষ অংংড়পরধঃরড়হ (ডগঅ) কর্তৃক তৈরী এই শপথনামার নাম ‘জেনেভা ঘোষণা’ (উবপষধৎধঃরড়হ ড়ভ এবহবাধ)।
[উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেটে ]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *