১. সোরা )
বর্তমান সময়ের হোমিওপ্যাথিক বিজ্ঞানীরা মিয়াজমকে এই ৩ প্রকার সহ আরও কয়েকটি ভাগ নিরুপন করেছেন- এর মধ্যে ডাঃ রাজন সংকরনের মিয়৯াজম তত্ব হোমিওপ্যাথ মহলে বেশ জনপ্রিয়। আমরা তা আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
১. সোরাঃ শব্দটি ল্যটিন ও গ্রীক ঞংড়ৎধঃ থেকে এসেছে। যার অর্থঃ-দূষণ, বিষ, ত্রæটি ইত্যাদি।
প্রচলিত শব্দ ব্যবহারে আমরা পাই চুলকানি, চুলকানি পোকা , চুলকানি সদৃশ চর্ম( যা সঠিক অর্থ নয় বরং আংশিক। কারণ মিয়াজমগুলি শুধু স্থানিক নয়। ইহা শারিরীক ,মানষিক, চারিত্রিক ও আঙ্গিক লক্ষণ প্রকাশের সাথে জড়িত।
তাহলে সোরা কি?
সোরাঃ সোরা হল- হ্যানেমান আবিস্কৃত ত্রি-রোগ বীজের একটি। যা মানুষের অপরাধবোধের ধুকধুকানী , বংশ পরম্পারায় ও সোরিক দেষের সংস্পর্ষ হতে সৃষ্ট ,রোগ উৎপাদনকারী উপাদান। এটি প্রথম মন ও চর্মে তার অস্তিত্ব প্রকাশ করে।

সোরার প্রকৃতি: সোরা হচ্ছে অতিন্দ্রীয়, অদৃশ্য ,গতিময় দূষিত রোগ উৎপাদনকারী শক্তি যাহা জীবদেহে অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করে, এবং জীবনীশক্তিকে দুর্বল করে দেহকে রোগের জন্য উপযোগী হিসেবে তৈরী করে। প্রথমে ইহা মনকে কলুষিত করে এবং চর্মে চুলকানী বা ”ইচ-ভেসিকেল” উৎপাদন করে মানব দেহে নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়। সোরা একক ভাবে অঙ্গহানি(ঈবষষ ফধসধমব) করতে পারেনা । সোরা শুধুমাত্র একা ক্রিয়াগত বিশৃংখলা তৈরী করতে পারে।যেমন: ভন্ডামী,স্বার্থপরতা,মানসিক বিশৃংখলা ইত্যাদি। সোরার রোগী নোংরা প্রকৃতির, চর্মে চুলকানী সহ অসহ্য জ্বালা ।
সুপ্ত সোরা কি?
সোরিক দোষে আক্রান্ত হওয়ার পর যে অবস্খায় নিস্ক্রিয় থেকে শরীরের ভিতরে প্রভাব বিস্তার করে সে অবস্থা-ই হল সাধারন অবস্থায় সুপ্ত সোরা ।
সোরার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ :

আমরা (মুসলিমরা) বিশ্বাস করি মানব সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। প্রথম পুরুষ মানুষ- আদি পিতা হযরত আদম (আ.)। প্রথম মহিলা মানুষ-আদি মাতা হযরত হাওয়া (আ.) । তাঁেদর প্রথম দুই পুত্র সন্তান ( তখন মা হাওয়া (আ.) জোড়ায় জোড়ায় সন্তান প্রসব করেছিলেন) ১. হাবিল ২.কাবিল । তাঁেদর প্রথম দুই কন্যা সন্তান

কাবিল তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে । এর কারণ ঈর্ষা, লোভ ও অহংকার। হত্যার পর তার অনুশোচনা। ধুকধুকানী , পরিতাপ ও অভিশপ্ত জীবনে বেঁচে থাকার লড়াই। এখান থেকে সোরার আত্মপ্রকাশ ( লেখক- অভিমত, ব্যক্তিগত চিন্তা। ) । তারপর থেকে বংশপরম্পরায় আমরা ঊত্তরাধীকারী সূত্রে পেয়েছি সোরা। সাথে জম্ম নিয়েছে সিফিলিস ও সাইকোসিস ।
সোরা যে ভাবে ছড়ায়:
প্রথম আক্রমন(ওহভবপঃরড়হ)ঃ আক্রান্ত সোরিক রোগীর সংর্স্পশে আসলে যখন ইচ-ভেসিকল দেখাদেয়১ , সরাসরি ছোঁয়া লাগলে, পরোক্ষ ছোঁয়া লাগলে( আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় পরিধান, স্পর্শ করা বস্তু স্পর্শ করা ও বাতাসের গতিপথে খুব নিকটে হওয়া ইত্যাদি) । এ অবস্থায় রোগী কে সুস্থ্য ই মনে হবে । কোন লক্ষণ দেখা দেয় যায় না।
অভ্যন্তরীন বিস্তার ( রহঃবৎহধষ উবাবষড়ঢ়সবহঃ)ঃ প্রথম আক্রমন(ওহভবপঃরড়হ) এর পর আক্রান্ত স্থান যদি পুজ, নিঃসরন মুছে ফেলে বা ধুয়ে ফেলে কোন উপকার হয় না ।কোন লক্ষণ দেখা দেয় যায় না।।কোন লক্ষণ না দেখিয়ে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে । এ অবস্থায় জীবনী শক্তি ও রোগ শক্তির অদৃশ্য আক্রমন দেহাভ্যন্তরে চলতে থাকে এবং জীবনী শক্তি আক্রান্ত স্থানে একটি ইচ-ভেসিকল বা ফুসকুরী তৈরী করে। সূচনা হয় প্রাথমিক সোরা(ঢ়ৎরসধৎু সধহরভবংঃধঃরড়হং ড়ভ চংড়ৎধ)।
বাহ্যিক বিস্তার ঃ বাহ্যিক বিস্তার বা ত্বকে বিস্তার কে ত পর্বে ব্যখ্যা করা যেতে পারে।
১. প্রাথমিক সোরা(ঢ়ৎরসধৎু সধহরভবংঃধঃরড়হং ড়ভ চংড়ৎধ)ঃ প্রাথমিক সোরার অস্তিত্ব প্রথম আক্রমন(ওহভবপঃরড়হ) এর ৭-১৮ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে একটি ইচ-ভেসিকল বা ফুসকুরী তৈরী করার মাধ্যমে। ফুসকুরীটি পানি বা পূজ পূর্ন(সাধারণত পানি থাকে) যার মধ্যে বিদ্যামান সোরা দোষের বিষাক্ততা । যা তৈরী করে ভয়ানক চুলকানীর। ফলে রোগী চুলকাতে থাকে(যা তাকে সাময়িক উপশম দেয়) এবং ভেঙ্গে যায় ফুসকুরী বা ইচ-ভেসিকল । এই ইচ-ভেসিকল এর নিঃসরন এত সংক্রামক যা প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। (প্রথম আক্রমন(ওহভবপঃরড়হ) দ্রষ্টব্য)
ফুসকুরী বা ইচ-ভেসিকল তৈরী ঃ ফুসকুরী বা ইচ-ভেসিকল তৈরীর পূর্ব বিকেরের দিকে রোগীর শীতাক্ততা ও হালকা গরম অনুভব এবং ঐ রাতে হঠাৎ ঘাম দিয়ে ফুসকুরী বা ইচ-ভেসিকল আক্রান্ত স্থানে আগমন করে।

প্রাথমিক সোরার চিকিৎসাঃ শরীরে যখন প্রাথমিক সোরা বিষে আক্রান্ত হয় তখন সুপ্ত পর্যায়ের আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র একমাত্রা সালফার প্রয়োগ করলেই সম্পূর্ণ আরোগ্য করা সম্ভব । তবে ইহা আরোগ্যে বিলম্বিত হলে বাকি লক্ষণ বিবেচনায় সদৃশ ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
মাত্রাঃ ১-টি ঔষধে সিক্ত পপি সাইজ গেøাবিউলস অথবা ডোজেজ ফর্মের এক মাত্রা । প্রয়োজনে একাধিক মাত্রা রেজিঃ চিকিৎসকের মতামত অনুযায়ী। [৫০] অ ঃৎবধঃরংব ড়হ ঙৎমধহড়হ ড়ভ গবফরপরহব –ঢ়৩ অংযড়শ কঁসধৎ ফধং
২. সুপ্ত সোরা() ঃ প্রাথমিক সোরার চুলকানী ও ফুসকুরী যখন বাহ্যক বা অভ্যন্তরীণ বিসদৃশ্য(হোমিওপ্যাথিক বা অহোমিওপ্যাথিক) চিকিৎসায় চাপাপড়ে এবং সোরা আবার সুপ্ত অবস্থায় চলে যায় এবং আভ্যন্তরীন ধংশলীলা চালিয়ে যায়।
সুপ্ত সোরার বৈশিষ্ট্য:
১.একটু মানসিক বির্পযায় হলেই মাথার বামদিকে প্রায়ই ব্যাথা করে ।
২. মাথায় চুলপড়া সমস্যা দেখা যায়। প্রায়ই চুল পড়তে দেখা যায়।
৩.বিশেষ কওে বিকেলের দিকে মাথায় ঘাম দেখা যায়।
৪.চোখে প্রদাহ , ব্যথা ও পানি পড়া।
৫.তরুনদের নাক দিয়ে রক্ত পড়া ।
৬. হঠাৎ ঠান্ডা লাগার প্রবনতা , সর্দি-কাশি , নাক বন্ধ হয়ে যায়।
৭.বিবর্ণ জিহবা, ফাটা ।
৮.মুখে তিক্ত স্বাদ ।
৯.সকাল ও রাতে মুখে শুস্কতা ।
১০.সার্ভিকাল গøান্ড ফোলা ।
১১.গরম খাবারে আগ্রহ ।
১২.পেট খালি খালি বোধ ও সকালে বমি বমি ভাব ।
১৩.মলদারে চুলকানি, পায়খানা শক্ত , পায়খানার সাথে মিউকাস মিশ্রিত ।
১৪. বারবার ফোঁড়া হবার উপক্রম ।
১৫.মহিলাদেও মাসিক খুব বেশি আবার খুব কম ।

সুপ্ত সোরার চিকিৎসাঃ এখানে শুধুমাত্র সালফার রোগিকে আরোগ্য করতে ব্যর্থ্য হয়। লক্ষণ অনুসারে সদৃশ ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে এবং অবশ্যই একমাত্রা সালফার প্রয়োগের পরে।

৩. সেকেন্ডারী সোরার বিকাশ(ঝবপড়হফধৎু সধহরভবংঃধঃরড়হং ড়ভ চংড়ৎধ)ঃ সুপ্ত অবস্থা(খধঃবহঃ ংঃধঃব ড়ভ চংড়ৎধ) কাটিয়ে অভ্যন্তরীন বিকাশ সম্পূর্ন হলে সোরিক(চংড়ৎরপ) অবস্থার প্রকাশ পায় । যাকে সোরিক ক্রনিক ডিজিজ ও বলা চলে। এ অবস্থায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যতিত চাপাপড়া চিকিৎসা(মলম,ইনজেকশন,অ-হোমিওপ্যাথি) করলে কিছুদিন ভালো থাকা যায় বটে কিন্তুু রোগ ও রোগীর অবস্থা আরও শোচনীয় হতে দেখা যায়। এ অবস্থাকে সেকেন্ডারী সোরা বলা হয়।

সেকেন্ডারি সোরার চিকিৎসা যেভাবে করতে হয়ঃ যথাযথ কেস টেকিং করে অধিকতর সদৃশ এন্টি-সোরিক ঔষধ প্রদান করতে হবে। এন্টি-সোরিক ঔষধ প্রয়োগে সোরিক লক্ষণ বা চুলকানি চর্মে দেখা দিয়ে রোগি পূর্ণ আরোগ্য হয় । ৫০ সহ¯্রতমিক প্রয়োগে এ বৃদ্ধি কমানো যায় তবে জটিল রোগির ক্ষেত্রে বৃদ্ধি দেখা দেয় । বৃদ্ধি দেখা দিলে অপেক্ষা করলেই চলে ।
সেকেন্ডারি সোরার বৈশিষ্ট্যঃ
১.সোরিক রোগি যে কোন ঘটনার প্রতি সদা জাগ্রত । আমেপাশে কি ঘটছে ; খুবই সতর্ক।
২.শারিরীক ও মানষিক দিক দিয়ে দুর্বল ।
৩.এরা তাঁদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খুশি নয় ; দৈনন্দিন কল্প চিন্তায় তাদের পাওয়া-চাওয়ার পরিমান বাড়িয়ে দেয়।
৪.সবসময় অস্থিরতা বিদ্যামান: কিছু একটা ঘটবে এই ভেবে।
৫. বিভিন্ন প্রকার ভয় সোরার নিত্য সঙ্গি । যেমনঃ একা হয়ে যাবার ভয়, অন্ধকারের ভয়, ভবিৎষতে কিছু ঘটবে এরুপ ভয়।
৬.মুহুর্তেই মুড বা অবস্থার পরিবর্তন।
৭. সোরিক রোগিরা ফুলের ঘ্রান, রান্নার গন্ধ , খারাপ সংবাদ ইত্যাদিতে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া দেখায়।
৮.ভীরুতা সাথে দুর্বলতা ।
৯.সময় দ্রæত চলে যায় এমন ।
১০.প্রচুর ঘাম, ডায়ারিয়া,প্রস্রাব ইত্যাদিতে রোগি উপশমবোধ করে।
১১.মাথাব্যথার সময় বা পূর্বে প্রচন্ড ক্ষিদে ।
১২.মাথা প্রচন্ড গরম । মাথায় গরম সহ্য করতে পারে না।
১৩.পছন্দের খাবারের তালিকায় মিষ্টি,টক, গরম খাবার, চা,কফি রয়েছে।
১৪.ক্ষুদা – খেলেও ভাল লাগে না , ক্ষুদা কমে না ।
১৫.মূত্রথলির বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে – মূত্ররোধ, মূত্রথলির মধ্যে প্রস্রাবপূর্ণ রয়েছে এমন অনুভূতি ।
১৬.মহিলাদের ওভারি সংক্রান্ত্র সমস্যা , শ্বেতপ্রদও ও মাসিকের আগে ও পরে বেদনা।
১৭.সূর্যাদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত , সকালে, পূর্ণিমায়, শীতে রোগাক্রমন বৃদ্ধি পায়।
এন্টি-সোরিক ঔষধ সমূহঃ

(Kent p1312) : Alum., am-c., am-m., anac., ant-c., arg-n., Ars-i.Ars., astac., aur-m.aur., Bar-m., bell., bor., brom., bry., calad.Calc-s.Calc., canth., carb-ac., carb-s., carb-v.caust.Cic., clem., cop., Crot-t., cycl., Dulc., fl-ac., Graph.Hep., hydr., iris.Jug-c.Jug-r.kali-ar.kali-bi., kali-c., kali-chl.kali-s.lach., Lappa-m., led., lith.lyc.merc.Mez., nat-m., nat-p., nat-s., nit-ac., Olnd.Petr., phos., phyt.Psor.ran-b.Rhus-t., rhus-v., sars.sep.sil.staph.Sul-i.Sulph.thuj.viol-t.

Psoriasis: Alum., am-c., ambr., Ars-i.ars., aur., bor., bry., bufo., calc-s., calc., canth., carb-ac., chin., clem., cor-r., cupr., dulc., iod., iris., kali-ar., kali-br., kali-c., kali-p., kali-s., led., lob., Lyc., mag-c., mang., merc-c., merc-i-r., merc., mez., nit-ac., nuph., petr., ph-ac., phos., Phyt.psor., puls., ran-b., rhus-t., sarr., sars., Sep.sil., sulph., tell., teucr., thuj. [kent RP- 1316]

Skin, eruptions, Herpetic : Acet-ac., agar., alum.am-c., ambr., anac., anan.apis.ars-i.Ars., aster., aur., bar-c.bar-m.bell., berb., bor., Bov.bry.bufo., cadm., calad., Calc-s.Calc., caps., carb-an.Carb-s.carb-v.caust.chel., cic.cist.Clem., cocc., com., Con., crot-h., crot-t.cupr., cycl., dol., Dulc.Graph., grat., hell., hep.hyos., iod., iris., kali-ar.kali-c.kali-chl.kali-i.kali-n., kali-p., kali-s.kalm., kreos.lac-c.lach.led.Lyc., mag-c., mag-m.manc., mang., Merc., mez., mosch., mur-ac., nat-a.nat-c.Nat-m., nat-p., nat-s.nit-ac., nux-v., olnd.par., petr.ph-ac., phos.plb., psor.puls., ran-b.ran-s., Rhus-t., rob., rumx., ruta., sabad., sars.Sep.Sil., spig., spong., squil., stann., staph.sul-ac., Sulph., tarax., Tell., teucr., thuj., valer., viol-t., zinc. [‡K›U †icvU©wi- 1312]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *