বাংলাদেশের মহান সংসদে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আইন 2023 পাস হওয়ার কারণে প্রস্তাবনা আসে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল এর বাস্তবায়ন।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল এর রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে আমাদের ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করব।
এ কাউন্সিলে আমরা কয়েকটি অংশ কামনা করি
১. চিকিৎসকদের নিবন্ধন ও পর্যবেক্ষণ
২. হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা
৩. হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
৪. হোমিওপ্যাথিক গবেষণ
১. হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নিবন্ধন: ব্যাচেলর ও ডিপ্লোমা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট একটি ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের একটি ডেটাবেজ তৈরি করতে হবে। যেখানে চিকিৎসকদের নাম অথবা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিয়ে সার্চ দিলে চিকিৎসকের নিবন্ধন এবং নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়গুলি যে কেউ অনুধাবন করতে পারবে।
২. হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা:বাংলাদেশে মূলত দুই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে সেটা হল ডিপ্লোমা ও ব্যাচেলর বা স্নাতক। বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা ক্যাটাগরিতে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের শিক্ষার মান নেই সেটা নির্ধারণ করত, তাদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা  অর্থাৎ বিএইচএমএস করার সুযোগ রাখতে হবে এবং এই সুযোগ ভারতের আদলে করার প্রস্তাবনা জানাচ্ছি। বিশেষ করে যেন সকল হোমিওপ্যাথিক ডিপ্লোমা চিকিৎসক যেন বিএইচএমএস কোর্স এ বিশেষ শর্তে উন্নীত হতে পারে। এবার বি এইচ এম এস বা স্নাত ক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের জন্য স্নাতকোত্তর বা উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। একটি হোমিওপ্যাথিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে অথবা প্রত্যেক বিভাগে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কোর্স চালু করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করা সময়ের দাবি। এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিক এবং হোমিওপ্যাথিক বিশেষজ্ঞ বিষয়টি আলাদা। যেমন অর্গানন বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, প্র্যাকটিস অফ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, হোমিওপ্যাথিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ এভাবে যথাযথ সিলেবাস প্রণয়ন করে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা। এই কোর্সগুলোর মান নিয়ন্ত্রণ ও যথাযথ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আধুনিক কোর্স প্রণয়ন করা, বিশেষ করে আল্ট্রাসনোগ্রাফি কোর্স , আল্ট্রাসনোগ্রাফি কোর্সটি যোগ ও প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই কোর্সটি সংযোজন করা।
৩. হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা: বাংলাদেশে অসংখ্য হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থাকলেও হসপিটালাইজড চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল। বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা চেম্বার বেসড প্রতিষ্ঠিত। এই সেবাকে গণমুখী করার জন্য প্রতিটি বিভাগে একটি করে আলাদা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। অথবা সরকার নির্ধারিত উপজেলা হসপিটালে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা। বেসরকারি হোমিওপ্যাথিক হসপিটাল তথা হোমিওপ্যাথিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার নির্মাণের পথ সহজ করা এবং এগুলো হোমিওপ্যাথিক কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি অথরিটি নির্ধারণ করা। যারা এই বেসরকারি হসপিটাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর অনুমোদন দেবে এবং নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে দেবে।
৪. হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও শিক্ষা নিয়ে গবেষণা: হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের জন্য গবেষণার দ্বার কে সহজ ভাবে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে গবেষণার সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে হোমিওপ্যাথিতে সেরকম কোন গবেষক নেই। এই গবেষণা খাতকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিতে হবে, বিশেষ করে কলেজ ভিত্তিক গবেষণা কে জোরদার করতে হবে এবং প্রফেসর ও প্রভাষকদেরকে গবেষণায় অর্থায়ন করে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। সর্বশেষ যেটি সেটি হল হোমিওপ্যাথি নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার এবং মন্তব্যের বিরুদ্ধে গবেষণা জার্নাল এ গবেষণা প্রকাশের ব্যবস্থা করে তার জবাবের ব্যবস্থা করতে হবে।
হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা প্রসারে এবং যথাযথ পাঠদান অব্যাহত রাখতে নিম্ন্মুক্ত ব্যবস্থা গুলো গ্রহণ করা যেতে পারে
১. কাউন্সিল হওয়ার পর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক বৃন্দদেরকে তাদের নিজ জেলায় বদলির ব্যবস্থা করে ১০০ভাগ ক্লাসে উপস্থিত বাধ্যতামূলক করা ।
২. হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা পে অর্ডারের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা
৩. ডি এইচ এম এস ও বি এইচ এম এস ভর্তির নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুমোদন এবং অন্যান্য কোর্সগুলোতে যে ভর্তির যথাযথ মান সেটি সমমান বিবেচনা করে ভর্তির অনুমোদন প্রক্রিয়া তৈরি করা। সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা যাতে মানুষ এই পেশায় আসতে আগ্রহ দেখায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart0
There are no products in the cart!
Continue shopping
0